গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীরা এবার অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। তাঁদের অনশন শুরু হয় আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে।
দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান নামের বিরোধিতা করে আসা শিক্ষার্থীরা এবার দাবি আদায়ে অনশন শুরু করলেও আশার আলো দেখছেন তাঁরা। কারণ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইউজিসি।
আজ বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ফখরুল হাসান ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন,
“ইউজিসির একজন সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মাধ্যমে আমরা জেনেছি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের দাবির আলোকে নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা এটিকে স্বাগত জানাই।”
শিক্ষার্থীদের চার প্রস্তাবিত নাম:
শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে চারটি বিকল্প নাম জমা দিয়েছেন, যেকোনো একটি চূড়ান্ত করার দাবি তাঁদের। প্রস্তাবিত নামগুলো হলো:
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট:
বিশ্ববিদ্যালয়টির নামকরণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ শুরু হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’ নাম পরিবর্তন করে 'গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি' রাখা হয়। নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
তাঁরা প্রথমে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ নামে পরিবর্তনের দাবি করেন। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, রেলব্লকেড, ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনসহ নানা কর্মসূচিতে। মাঝে মধ্যে আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় তাঁরা আবারও আন্দোলনে ফেরেন।
‘লংমার্চ টু ইউজিসি’ ও অবস্থান কর্মসূচি:
গত সোমবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ‘লংমার্চ টু ইউজিসি’ কর্মসূচি নিয়ে রওনা দেন শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা ইউজিসির সামনে পৌঁছান এবং অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। দুই দিনের অবস্থান শেষে আজ থেকে শুরু করেন অনশন।
পরবর্তী করণীয়:
আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নাম পরিবর্তন নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে আশা করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁদের অনশন কর্মসূচি চলবে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!