স্টাফ রিপোর্টার - ইমরান হক।। 
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ২০২৫ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে চাঁদপুরে বিজয় র‍্যালি ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি।

বুধবার (৬ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে চাঁদপুর জেলা বিএনপির উদ্যোগে ৩৬ জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত স্থান ফয়সাল মার্কেটের বিপরীতে শহরের বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক। আরো বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. একেএম সলিম উল্যাহ সেলিম।

চাঁদপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আকতার হোসেন মাঝির পরিচালনায় সমাবেশে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল, দেওয়ান মো. সফিকুজ্জামান, খলিলুর রহমান গাজী, ফেরদৌস আলম বাবু, হুমায়ুন কবির প্রধান, ডিএম শাহজাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিমুছ সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনির চৌধুরী, হাজী মোশারফ হোসাইন, অ্যাড. শামসুল ইসলাম মন্টু, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড, হারুনুর রশিদ, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহজালাল মিশন, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আফজাল হোসেন, মাজহারুল ইসলাম শফিক, কোষাধ্যক্ষ আ. কাদির বেপারী, প্রচার সম্পাদক শরিফ উদ্দিন আহমেদ পলাশ, দপ্তর সম্পাদক হযরত আলী ঢালী, যুব বিষয়ক সম্পাদক বশির আহমেদ রিপন, জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল আমিন খান আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, জেলা কৃষক দলের সভাপতি এনায়েত উল্লাহ খোকন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাড. মুনিরা চৌধুরী, সহ-সভাপতি অ্যাড, কোহিনুর বেগম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মাসুদ মাঝি, সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল আলম সূর্য, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল পাটওয়ারীসহ বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

বিজয় র‍্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, ০১ বছর হয়েছে এ সরকার চেয়ারে। অথচ শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করে নাই। আগামীতে করতে পারবে কিনা আমাদের তাতে সন্দেহ আছে। যদি না পারেন তাহলে বিএনপি এই বিচার সম্পন্ন করবে। আগামীদিনের বাংলাদেশ হবে তারেক রহমানের বাংলাদেশ, বিএনপির ৩১ দফার বাংলাদেশ।

তিনি আরো বলেন, ০১ বছর অতিবাহিত হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে চাঁদপুরের সাধারণ জনগণ বসবাস করছে। কিছু কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের দলের নামে কুৎসা রটিয়েছে। আপনারা চেষ্টা করবেন কেউ যেনো কোনো অপরাধের সাথে জড়িত না থাকে। এখানে আজকে চাঁদপুর জেলার সকল নেতা উপস্থিত আছেন, জেলার ২৩ লক্ষ ভোটারের প্রতিনিধিত্ব করেন আপনারা সবাই।

সুতরাং আমাদের নেতা তারেক রহমানের স্পষ্ট নির্দেশনা, যারা কোনো অপকর্মের সাথে জড়িত থাকবে তাদের বিএনপির কোনো কমিটিতে স্থান হবে না। কোনো মাদক কারবারি, মাদক সেবনকারী, কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজের স্থান বিএনপির কোথাও হবে না।

আ.লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কিছু কিছু নেতা-কর্মী ভাষণ দেয়ার চেষ্টা করে, ভোর পাঁচটার দিকে মিছিল করে। তাদেরকে বলতে চাই, আপা আর আসবে না। আপনাদের আপা আপানাদের রেখে পালিয়ে গেছে। আপনাদের কাদের কাকাও আর আসবে না।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী নিহত এবং আহত হয়েছে। আজকের দিনে তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে।

তিনি বলেন, আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। অনেকে মনে করেন যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। আসলে যুদ্ধ শেষ হয় নাই। আমাদের যুদ্ধ চলবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দখলবাজদের বিরুদ্ধে, রাজাকারের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তারেক রহমানকে বাংলাদেশে এনে প্রধানমন্ত্রী না বানানো পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলবেই। আজকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমবেত হয়েছে। এজন্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডে র‍্যালিপূর্ব সমাবেশ শেষে বিকেল ৪:৩০ টায় শুরু হয় বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি। পরে স্টেডিয়াম সড়কের ইলিশ চত্বর, মিশন রোড, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, বাইতুল আমিন মসজিদ চত্বর, কালীবাড়ি মোড়, জেএম সেনগুপ্ত রোড হয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয় র‍্যালি। নানা সাজে সজ্জিত হয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করে। সমাবেশে জেলা, পৌর, উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচিতে অংশ নিতে দুপুর থেকেই নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেন।