কিয়ামতের দিন প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ তায়ালা পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন করবেন—জীবন, যৌবন, সম্পদ, ব্যয় এবং জ্ঞানের ব্যবহার নিয়ে। হাদিসে এ বিষয়ে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন।
বিস্তারিত:
মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদাত করবে।”
(সুরা জারিয়াত, আয়াত: ৫৬)
মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য ইবাদত—এই বার্তা বারবার কোরআন ও হাদিসে এসেছে। আল্লাহ আরও বলেন,
“যে ব্যক্তিই মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, আমি অবশ্যই তাকে উত্তম জীবন দান করব এবং তাদের উৎকৃষ্ট কর্ম অনুযায়ী প্রতিদান দেব।” (সুরা নাহল, আয়াত: ৯৭)
মুফাসসিররা বলেন, এখানে “উত্তম জীবন” বলতে দুনিয়ার তৃপ্ত ও হালাল জীবিকা, ইবাদতের তাওফিক এবং আখেরাতে জান্নাতের জীবন—সবকিছুর সমন্বয় বোঝানো হয়েছে।
হাদিসে উল্লেখ আছে:
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের দুটি পা আল্লাহর দরবার থেকে নড়বে না, যতক্ষণ না তাকে পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে:
১. জীবন—কীভাবে অতিবাহিত করেছে?
২. যৌবন—কোথায় ব্যয় করেছে?
৩. সম্পদ—কোথা থেকে উপার্জন করেছে?
৪. সম্পদ—কোথায় ব্যয় করেছে?
৫. জ্ঞান—তা অনুযায়ী কী আমল করেছে?”
(তিরমিজি, হাদিস: ২৪১৬)
এ ছাড়া কোরআনে আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করে বলেছেন,
“সেদিন তোমাদের নিয়ামতসমূহের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।”
(সুরা তাকাসুর, আয়াত: ৮)
সাহাবায়ে কেরামের জীবনেও আত্মসমালোচনার গুরুত্ব বিশেষভাবে দেখা যায়। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.) বলেছেন—
“তোমাদের থেকে হিসাব নেয়ার আগে নিজেরাই নিজেদের হিসাব নাও; তোমাদের ওজন করার আগে নিজেদের ওজন করো। আজ যদি নিজের হিসাব নাও, তাহলে কিয়ামতের দিনে তা তোমাদের জন্য সহজ হবে।” (কিতাবুজ জুহুদ: ১/১০৩)
সবশেষে শিক্ষা হলো,
মানুষকে আল্লাহর দেয়া সময়, শক্তি, সম্পদ ও জ্ঞান সঠিক পথে ব্যবহার করতে হবে—কারণ একদিন প্রতিটি প্রশ্নের জবাব দিতে হবে আল্লাহর সামনে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!