ঢাকা, কখনোই (তারিখ): ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদবিরের চাপ দিন দিন বাড়ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণার পর যে নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হওয়ার কথা, তা ঘিরে পুলিশ বদলি, আনসার পোস্টিং, মামলা-সংশ্লিষ্ট ছাড়পত্র এবং নানা ধরনের অনুরোধ নিয়ে প্রতিদিন মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছেত্বে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সরকারি সূত্র জানায়, সাধারণ নাগরিক থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কিছু সক্রিয় সরকারি কর্মচারী—সবাই একাধিক অনুরোধ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কক্ষে তদবির করছেন। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের কাজ-কর্ম ও সরকারি সেবার স্বাভাবিক গতিতে বিঘ্ন ঘটছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই অনিয়ম রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নেয়া ব্যবস্থা হিসাবে সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশের জন্য একটি বিশেষ গেট চালু করেছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যুকৃত বিশেষ পাস ছাড়া কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না—এ নির্দেশ গতকাল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। স্টিকারবিহীন যানবাহন মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ঢুকতে পারছে না, এবং সকাল থেকে প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষকে কোন ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। সাংবাদিকদের জন্য কিছু শিথিলতা রাখা হলেও, গেটের দু’পাশে মোতায়েন রাখা পুলিশ সদস্যরা অনুমোদিত ব্যক্তিদের কার্ড পাঞ্চ করে ভেতরে ঢুকতে দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (সচিবালয় নিরাপত্তা শাখা) যুগ্ম সচিব মো. জসিম উদ্দীন বলেছেন, অনেক দর্শক আগের মতো আবাধ হয়ে ঘোরাফেরা করতেন—এভাবে অনধিকার প্রবেশ ও তদবির বৃদ্ধি পাচ্ছিল। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তদবির বাণিজ্য রোধ করাই মূল উদ্দেশ্য; কর্মকর্তারা ও সাংবাদিকরা মাস্টার কার্ড থাকলে প্রবেশ করতে পারবেন। ভবিষ্যতে সচিবালয়ের অন্যান্য ভবনেও একই পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে কেউ তাদের নিজস্ব মন্ত্রণালয় ছাড়িয়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অনধিকার প্রবেশ করতে না পারে।
মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, অনেকেই মামলা থেকে মুক্তি চাওয়া, বদলি, লাইসেন্স বা সরকারি সুবিধা পেতে দিনভর আড্ডা ও দরবার করেন। এর ফলে সেবাগ্রহণে জটিলতা এবং কর্মকর্তাদের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে—এ সমস্যার সমাধানেই নতুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের ব্যবস্থা দেশের অন্যান্য মন্ত্রণালয়েও ধাপে ধাপে প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করার জন্য লগইন করুন!